আজাদুর রহমান:
বগুড়ায় প্রশাসনের অভিযান চললেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মসলার বাজার। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে বেড়েই চলছে সব ধরনের মসলার দাম। আমদানি বাড়লেও বিভিন্ন অজুহাতে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব মসলা। বিশেষ করে সাদা ও কালো এলাচ, জিরা এবং আদা-রসুনের দামের উত্তাপে পুড়ছে বগুড়ার মসলার বাজার।
এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার অভিযান চালানো হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার বগুড়ার ফতেহ আলী বাজার ও রাজাবাজারের পাইকারি ও খুচরা মসলার দোকানে অভিযান করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান। এই অভিযানে দুই দোকানে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মূল্যতালিকা হালনাগাদ না করা ও আমদানিকৃত বিভিন্ন মসলার ডকুমেন্টস প্রদর্শন করতে না পারায় এই জরিমানা করা হয়।
১লা জুন দুপুর পর থেকে দুই ঘন্টার অধিক সময় অভিযান পরিচালনা করে শহরের তিব্বতের মোড় এলাকায় মিলন ট্রেডার্স এর গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করেন বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় মেয়াদোত্তীর্ণ জিরা বিভিন্ন ধরনের মসলায় পোকামাকড় সহ মান নষ্ট হওয়া এবং অতিরিক্ত মজুদের কারণে অভিযান পরিচালনা করে সকল বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত হন ভ্রাম্যমান আদালত।
এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত বলেন, কোনো ধরনের মসলার মজুদ করে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।
এদিকে শুক্রবার বগুড়ার ফতেহ আলী ও রাজা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাদা এলাচ প্রকারভেদে প্রতিকেজি দুই হাজার ৮শ’ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে এক হাজার টাকা পর্যন্ত।
কালো এলাচের কেজি দুই হাজার ৭শ’ টাকা। কেজিতে দাম বেড়েছে ২শ’ টাকা পর্যন্ত। জিরা ৬শ’ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ৭৫০ টাকা, লবঙ্গ এক হাজার ৭শ’ টাকা, দারুচিনি ৫৫০ থেকে ৬শ’ টাকা, গোলমরিচের কেজিতে ২শ’ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে ৯শ’ থেকে এক হাজার টাকা হয়েছে। এছাড়া বজ ৯শ’ টাকা কেজি, ধনিয়া ২শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আদার দাম বেড়ে ২১০ থেকে ২৪০ ও রসুন ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বগুড়ার রাজা বাজারের মসলা বিক্রেতা রঞ্জু মিয়া জানান, কোরবানি ঈদের আগে সাধারণত মসলার দাম বাড়ে। মূলত বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে এই দাম বৃদ্ধির কারসাজি করে থাকে। আমরা বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি।
মসলা কিনতে আসা আমিনুর ইসলাম জানান, কোরবানি দিতে না পারলেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর মসলা কিনতে হয়। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর মসলার দাম অনেক বেশি।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, কোন সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে না। যারাই সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণে বাধা দেবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।