আজাদুর রহমান:
বগুড়া থেকে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের একরকম জিম্মি করে ঈদ বোনাসের নামে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। ঢাকাগামী নন এসি বাসের টিকেটে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা লেখা হলেও নেয়া হচ্ছে ৮০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত।
ঢাকা-বগুড়ার দুরুত্ব ২২০ কিলোমিটার। প্রতি কিলোমিটারে ৩ পয়সা বাসভাড়া কমেছে। মালিকদের বেঁধে দেওয়া ৫৫০ টাকা থেকে যাত্রীদের ভাড়া কমবে ৬ টাকা ৬০ পয়সা। মাসে গড়ে একবার যাতায়াত করলে বছরে যাতায়াত খরচ বাঁচবে ৭৯ টাকা ২০ পয়সা। দুটি ঈদ উৎসবে চারদফা আসা যাওয়ায় একজন যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় গড়ে ৪০০ টাকা। সেই হিসেবে ভাড়া কমানোর পরও একজন যাত্রীর পকেট কাটা যাবে বছরে ৩২০ টাকা ৮০ পয়সা।
ঈদের ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে ঢাকায় যাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। কাজে ফেরা যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় কাউন্টারে টিকেট অপ্রতুল। তবে কাউন্টারের বাইরে মিলেছে টিকেট।
একজন যাত্রীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা প্রতিবছরই এভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। সব কাউন্টারে ৮০০ টাকা করে টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে।
বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়ায় ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টারের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা বেশিরভাগ যাত্রীর অভিযোগ ঈদ বোনাসের নামে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বাড়তি আদায় করা হচ্ছে।
শফিক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন,‘শাহ ফতেহ আলী পরিবহন থেকে গতকাল টিকেট কেটেছি। লিখে রেখেছে ৬৮০ টাকা। কিন্তু নেয়া হয়েছে ৯০০ টাকা।’ একইরকম অভিযোগ আরও অনেক যাত্রীর। এদিকে, ঢাকা থেকে ফিরতি যাত্রী নেই। তাই লোকসান হলেও ঈদ উপলক্ষে যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০০ টাকা বেশি নিয়ে ৬৮০ টাকায় টিকেট বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন পরিবহনের শ্রমিকরা।
এস আর ট্রাভেলস ঠনঠনিয়া কাউন্টারের কর্মকর্তা বলেন, ‘বাস মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়নসহ সকল কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে আমরা কিছু টাকা ভাড়া বৃদ্ধি করেছি। ঢাকা থেকে গাড়ি খালি আসতে হচ্ছে, তারপরও যাত্রীদের ঢাকায় ফেরাতে কোনো সমস্যা যেন না হয় এ কারণে কোম্পানির লোকসান সত্ত্বেও আমরা সেবা দিচ্ছি। আগামী ১ মে পর্যন্ত এ ভাড়া থাকবে। তারপর স্বাভাবিক ভাড়া নেয়া হবে।’
যদিও বিআরটিএ নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কোনোভাবেই বাড়তি ভাড়া আদায়ের সুযোগ নেই বলছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী বলেন, ‘বোনাস, সম্মানী কোনো নামেই বাড়তি ভাড়া নেয়ার সুযোগ নেই। কোনো সংগঠনের সিদ্ধান্ত যদি বিআরটিএর নিয়মের বাইরে যায় তাহলে সেটা দণ্ডনীয় অপরাধ। ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ী আমরা এরইমধ্যে অভিযান পরিচালনা করছি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঈদের মৌসুমে প্রতিদিন বগুড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে প্রায় ২৫০টি কোচ। যেখানে প্রতিদিন অন্তত সাড়ে ১২ হাজার যাত্রী ঢাকায় যাত্রা করেন।