আজাদুর রহমান:
বগুড়ার গাবতলীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মাঠে নেমেছেন। দলীয় কোন প্রতিক না থাকায় এবং প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিধি নিষেধ না থাকার কারনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করে দেয়ায় একই দলেরই একাধিক প্রার্থী হচ্ছেন।
অপর দিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপির কোন সাড়া নেই। গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোরশেদ মিলটন ও সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক নতুন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ডেমী নির্বাচনের সরকারের অধীনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশ নেব না। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এই তিন পদেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, বন্দর ও জনবহুল এলাকায় গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়, দোয়া প্রার্থনা ও লিফলেট বিতরণ করে গণসংযোগ করছেন।
এরই মধ্যে ২১মার্চ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষনা করেছেন। যা প্রথম ধাপে নির্বাচন ১৫২টি উপজেলায় আগামী ৮ই মে অনুষ্ঠিত হবে। আর প্রথম ধাপেই রয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা ছাড়াও গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ফলে তিন পদের প্রার্থীরা আরো নড়েচড়ে বসেছেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার লক্ষে প্রার্থীরা নানা কৌশলে কাজ করছেন।
গাবতলীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং মোহাম্মাদ হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ অরুন কান্তি রায় সিটন, বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য ও গাবতলী উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহেল বাকী পাইকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাহানুর ইসলাম সাকিল, সেনা বাহিনীর নন-কমিশন অফিসার (অবঃ) আতাউর রহমান রানু।
ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুক্তা, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ, গাবতলী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব মিঠু পাইকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সোন্দাবাড়ী আজাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মিলটন হোসাইন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন বর্তমান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেকসেনা আকতার, সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক পাপিয়া রাজ্জাক, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সরকারী মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামীমা আকতার সুমি এবং মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেরদৌসী বেগম।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী কৃষিবিদ অরুন কান্তি রায় সিটন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষের বেশ সাড়া পেয়েছি। ফলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আরেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহেল বাকী পাইকার জানান, আমি মাঠের মানুষ, গত সংসদ নির্বাচনসহ পূর্বে আরো অন্যান্য নির্বাচনে মাঠে থেকে কাজ করেছি এবং বর্তমানও মাঠে থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে জানতে পেয়েছি, মানুষ এবার পরিবর্তন চায়। আর এই পরিবর্তনে আমাকে জনগণ বেচে নেবে ইনশাআল্লাহ। বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মুক্তা বলেন, আমি ৫বছর দায়িত্ব পালনকালে মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্ঠা করেছি। আগামীতেও ভাল ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের পাশে থাকতে চাই।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা মিলটন হোসাইন জানান, উপজেলাবাসির জন্য কাজ করতে প্রার্থী হতে চাই। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রার্থী রেকসেনা আকতার এবং প্রার্থী নাজমা বেগম পৃথকভাবে জানান, আমরা মানুষের পাশে থেকে কাজ করে আসছি। যে কারনে রেকসেনা ও নাজমা উভয়ই বিজয়ের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। উল্লেখ্য, ১টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাবতলী উপজেলা। গাবতলী উপজেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে এ উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে ২লাখ ৮০হাজার ৯’শ ২৮জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১লাখ ৪১হাজার ৩’শ ২৩ ও মহিলা ভোটার ১লাখ ৩৯হাজার ৬’শ ৫জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।