আজাদুর রহমান:
এবারও জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২৪ প্রতিযোগিতায় খ বিভাগে দেশাত্ববোধক গানে গোল্ড মেডেল পেয়ে বাবা-মা, স্কুল, শিক্ষাগুরু ও বগুড়ার জন্য আবার সুনাম বয়ে আনল নবনীতা ঘোষ শ্রেয়া। এই নিয়ে পর পর পাঁচবার সে জাতীয় পুরস্কার পেল। পড়ালেখার পাশাপাশি শ্রেয়া নজরুল সংগীত এবং আধুনিক গান নিয়ে অনেক দূর যেতে চায় এবং অনেকের মধ্যে একজন হয়ে বগুড়ার জন্য সম্মান বয়ে আনতে চায়।
নবনীতা ঘোষ শ্রেয়া। পড়ালেখা করে বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান স্কুল এন্ড কলেজে দশম শ্রেণিতে। বাবা সুমন ঘোষ একজন ব্যবসায়ী। মা সাথী ঘোষ গৃহিনী। বাড়ি শহরের বড়গোলা এলাকায়। বগুড়ায় তাদের বয়সি যে ক’জন শিল্পী আছে ইতোমধ্যে শ্রেয়া তাদের মধ্যে একজন নির্ভরযোগ্য শিল্পী হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এখন তার নাম প্রায় সবাই জানে। এই অবস্থান তৈরি করতে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তার শিল্পী হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি যার অবদান তিনি শ্রেয়ার প্রয়াত ঠাকুরদা’ সুশান্ত কুমার ঘোষ।
এরপরে তার এই সাফল্যের পেছনে আছেন বাবা এবং মা। শ্রেয়ার মা সাথী ঘোষ জানান, খুব ছোটবেলা থেকে শ্রেয়া গান গাইতে এবং শুনতে পছন্দ করতো। তার আগ্রহ দেখে মাত্র পাচঁবছর বয়সে তার হাতেখড়ি হয় গানের ভূবনে। প্রথমে সে ভর্তি হয় উদীচী শিল্পীগোষ্ঠিতে। সেখানে সে শিক্ষা নেয় কামরুন মনিরা ডালিয়ার কাছে। এরপর ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতের প্রশিক্ষক হাসিবুর রহমান হাসুর কাছে তালিম নিচ্ছে। তার এই সাফল্যের পেছনে আরও অবদান রেখেছেন বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল।
বগুড়ার পরিচিত মুখ শ্রেয়ার ঝুলিতে এরই মধ্যে উঠে এসেছে অনেক অনেক জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা এবং স্থানীয় পুরস্কার। গতবছর ২০২৩ এ নজরুল সঙ্গীতের খ বিভাগ থেকে ২য়, জাতীয় শিশু পুরষ্কার প্রতিযোগিতা ২১-২২ এ নজরুল এবং দেশাত্মবোধক গানে খ বিভাগে জাতীয় পর্যায়ে ২য় । শ্রেয়া বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা ২০১৫ তে ছড়া গানে ২য়, সত্যেনসেন জাতীয় গণসংগীত উৎসব-২০১৯ এ গণ সংগীতে ২য়, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২১-২২ এ উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে দেশাত্মবোধক, নজরুল সংগীত ও লোকসংগীতে ১ম স্থান অর্জন করেছিল।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে স্থানীয় প্রতিযোগিতায় দেশাত্মবোধক গানে ১ম হয়েছিল। বাংলাদেশ বেতার, রাজশাহীতে শ্রেয়া লালন ও দেশাত্মবোধক গানের তালিকাভূক্ত শিল্পী। এছাড়াও শ্রেয়া চ্যানেল আই সেরাকন্ঠ ও এটিএন বাংলার আগামীর তারকা রিয়েলিটি শোতে অংশ নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত গিয়েছিল। এরপর ২০১৯ সালে টিএমএসএস’র মেঠো সুর প্রতিযোগিতায় অনেক প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ফাইনালে অংশগ্রহণ করেছিল।
ভবিষ্যতের ব্যাপারে শ্রেয়া জানায়, খুব ছোটবেলা থেকেই গান তার গাইতে ভাল লাগে। পরিবারের সবাই এব্যাপারে উৎসাহ দেন। সাংস্কৃতিক একটা পরিমন্ডলে গানের জগতে তার অনুপ্রবেশ হয়। ছোট ভাই স্নিগ্ধজিৎও তাকে এখন তবলা বাজিয়ে সহযোগিতা করে। শুধু কি তবলা সে অনেক সুন্দর গানও গাইতে পারে বলে জানায় শ্রেয়া। গান এবং পড়ালেখা দুটোই তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই এই দুই জগতেই সে তার মেধা, সাফল্য দিয়ে বগুড়ার জন্য সম্মান বয়ে আনতে এবং বাবা-মা-দাদার মুখ উজ্জ্বল করতে চায়।