ডেস্ক রিপোর্টঃ
গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের প্রায় ৩৬ শতাংশ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। সেই হিসাবে প্রায় ১০ কোটির ওপর ডায়াবেটিক রোগী প্রতিবছর পবিত্র রমজানের রোজা রাখছেন। তাঁদের অনেকেরই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন নিতে হয়।
এই মাসে আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্য গ্রহণের সময়সূচিতে বড় পরিবর্তন আসে। যাঁরা ইনসুলিন নেন, তাঁরা রক্তে শর্করা কমে যাওয়া বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া নিয়ে আতঙ্কে থাকেন। এ জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রোজা শুরুর আগেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শে পুনর্নির্ধারণ করে নিতে হয়।
ইনসুলিন নেওয়া বেশির ভাগ রোগী সাধারণত দুই বেলা প্রি-মিক্সড ইনসুলিন ব্যবহার করে থাকেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকলে রোজার আগের সকালের মাত্রার (ডোজ) পুরোটা ইফতারের সময় ও রাতের মাত্রার অর্ধেক পরিমাণ সাহ্রির সময় নিতে হয়।
অনেকে তিন বেলা স্বল্পমেয়াদি ইনসুলিন (দেখতে স্বচ্ছ) নিয়ে থাকেন। এসব রোগী রমজান–পূর্ব সকালের মাত্রা ইফতারের সময়, দুপুরের মাত্রা রাতে খাবারের সময় (না খেলে নেওয়ার প্রয়োজন নেই) ও রাতের মাত্রার অর্ধেক সাহ্রির সময় গ্রহণ করবেন। তিন বেলা ইনসুলিনের সঙ্গে কেউ যদি রাতের বেলা দীর্ঘমেয়াদি ইনসুলিন (দেখতে ঘন) নিয়ে থাকেন, তবে তা অর্ধেক মাত্রায় সাহ্রিতে গ্রহণ করবেন। আর যাঁরা ঘুমানোর আগে একটি নির্দিষ্ট সময় বা বেড টাইমে ইনসুলিন নিতেন, তা একই সময় নেবেন।
রোজায়ও মাঝেমধ্যে গ্লুকোমিটারে রক্তের শর্করা পরীক্ষা করবেন। এতে রোজা ভাঙে না বলে ইসলামি চিন্তাবিদেরা মত দিয়েছেন। ইফতারের আগে যে গ্লুকোজ মাপা হয়, তা অন্য সময় ফাস্টিং বা খালি পেটে সুগারের নির্দেশনা দেয়। ইফতারের দুই ঘণ্টা পর মাপলে তা খাওয়ার পরের সুগারকে নির্দেশনা করে। ইফতারের আগে যদি রক্তের শর্করা ৪ বা এর কাছাকাছি নেমে যায়, তবে আগের মাত্রা থেকে কিছুটা কমিয়ে নেবেন। ইনসুলিনের সঙ্গে যদি কেউ ট্যাবলেট গ্রহণ করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে সেই ট্যাবলেট গ্রহণের মাত্রা ও সময়টাও পুনর্নির্ধারণ করে নিতে হবে।
সাহ্রিতে উঠতে দেরি হলে বা খেতে না পারলে প্রয়োজনে ইনসুলিন গ্রহণ না করেই রোজা রাখবেন। অসুস্থ অবস্থায় মনের জোরে কখনোই রোজা রাখতে যাবেন না। কখনো নিজে ইনসুলিনের মাত্রা নির্ধারণ করবেন না। কারও পরামর্শে ইনসুলিন বন্ধ করে বা ইনসুলিনের পরিবর্তে ওষুধ গ্রহণ করে রোজা রাখতে যাবেন না।