আজাদুর রহমান:
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রূপা এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। ডিফেন্সন ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স কার্যালয়ের অডিটর পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে মাহবুবা নাসরিন রূপার দাবি, তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। পরে পুলিশ অধিকতর তদন্তে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
বহুল আলোচিত মাহবুবা নাসরিন রূপা বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ভুঁইপুর গ্রামের বাসিন্দা। ইডেন মহিলা কলেজে পড়ার সময় ছাত্রলীগের নেত্রী ছিলেন। ২০১৯ সালের মার্চে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দুপচাঁচিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।
২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের অডিটর পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িয়ে থাকার অভিযোগে রূপাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তখন তার ব্যাগ থেকে ডিভাইস, দুই লাখ টাকা ও প্রশ্নপত্রের উত্তরের কপিসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করেন।
৪ ফেব্রুয়ারি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রূপা। তবে পরবর্তীতে পুলিশের চার্জশিটে এই মামলার অন্য সাত আসামির নাম থাকলেও নাম ছিল না রূপার।
ওই চার্জশিটে বলা হয়েছিল, রূপার কাছ থেকে জব্দকৃত আলামত আইটি ফরেনসিক শাখা থেকে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা শেষে মতামত দেওয়া হয়, আইফোনে অডিট পদে নিয়োগ পরীক্ষা-সংক্রান্ত কোনো অডিও, ভিডিও এবং এসএমএস আদান-প্রদানের তথ্য পাওয়া যায়নি। সিআইডির ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মতামত পর্যালোচনায় জানা যায়, আসামি রুপার ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও আইফোনে অডিট পদে নিয়োগ পরীক্ষা-সংক্রান্ত কোনো অডিও, ভিডিও এবং এসএমএস আদান-প্রদানের নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি বিধায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনো ধারায় অপরাধ প্রমাণ করার আইনত সুযোগ নেই।
তবে ঘটনার পরপরই তাকে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই বছরের ২ জুন রূপাকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
মাহাবুবা নাসরিন রূপা তার হলফনামায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। হলফনামায় লিখেছেন, তাঁর বার্ষিক আয় ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তার মধ্যে বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে পান ২ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ওবং শেয়ার সঞ্চয় থেকে ১০ হাজার টাকা। হাতে নগদ রয়েছে ১ লাখ টাকা। আর আছে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার। আসবাবপত্র আছে ৫৪ হাজার টাকার।
এদিকে মাহাবুবা নাসরিন রূপার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া তাকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল-রাজি জুয়েল।