ডেস্ক রিপোর্টঃ
ফেনীতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চক্রটিতে জড়িত একজন বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর রাতে অভিযান চালিয়ে অন্য দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মোহাম্মদ ইকবাল (৩৩), আরিফ উল্লাহ (৪০) ও রকিবুল হাসান ওরফে রাকিব (৩৪)।
ইকবাল চট্টগ্রাম জেলার চাঁন্দগাঁও থানার পাঠানিয়াগুদা এলাকার ইলিয়াস মেম্বার বাড়ির মো. ইসমাইলের ছেলে। অন্য দুজন কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার বাসিন্দা। এর মধ্যে আরিফ মাতারবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সিকদারপাড়া এলাকার কুড়া মিয়ার বাড়ির মো. জাকারিয়ার ছেলে এবং রাকিব কালারমার ছড়া ইউনিয়নের ইউনুছখালী মাইজপাড়া এলাকার নূর আহাম্মদের বাপের বাড়ির মোজাম্মেল হকের ছেলে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থোয়াই অং প্রু মারমা জানান, শহরের স্টেশন রোডের করিম স্পোর্টসের মালিক করিমুল হক ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকে হিসাব খুলে লেনদেন করতেন।
শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের ব্র্যাক ব্যাংক শাখার ওই অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৬ জানুয়ারি রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে চার ধাপে সাত লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়।
পরদিন ব্যাংকে গিয়ে তিনি কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে ঘটনা শুনে তারা বিস্মিত হয়। এ ঘটনায় করিমুল হক ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার এসআই সাইফুল আলম জানান, তদন্তে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকের মাধ্যমে প্রতারণা করা চক্রের চারজনের নাম পেয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ইকবালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
কিন্তু একাধিকবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও মুখ খোলেননি ইকবাল। পরে বুধবার তাকে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশিকুর রহমানের আদালতে হাজির করা হলে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জানিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
জবানবন্দিতে তিনি চাঞ্চল্যকর নানা তথ্যও প্রদান করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে রকিবুল হাসান রাকিব ও আরিফ উল্লাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার এই দু’জনকে আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। চক্রের আরও একজনকে ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, এ চক্রটি বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার তথ্য দিয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ওই চক্রের সদস্যদের হোয়াটস্অ্যাপে ‘বেস্ট বয়’ নামে একটি গ্রুপ রয়েছে।
আসামি ইকবালের কাছে ইসলামী ব্যাংক, সিটি ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংকের শত শত ই-মেইল রয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোন সিআইডির ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্র্যাক ব্যাংকের ‘আস্থা অ্যাপ’সহ বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাপসে গ্রাহকরা নামের সঙ্গে জন্মতারিখ মিলিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেন। আবার অনেকে পাসওয়ার্ডে জন্মতারিখ বা নাম ব্যবহার করেন। ফলে হ্যাকাররা সহজে অ্যাকাউন্ট দখলে নিতে পারেন।
এসব বিষয়ে গ্রাহকদের আরও সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকেও অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলেন পুলিশ সুপার।