আজাদুর রহমান:
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের নারী ইউপি সদস্য ববিতা বেগম (৩৮) ও ৮ নং ওয়ার্ডের পুরুষ ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ তার লোকজনের বিরুদ্ধে মারপিট, ছিনতাই পর্ণগ্রাফি আইনে থানায় দুইটি লিখিত অভিযোগ করেন একই এলাকার ভুক্তভোগী এমদাদুল ইসলাম ও রতনচন্দ্র কবিরাজ।
গত ৭ ও ২২ শে মার্চ রাতে সুকানপুকুর ইউনিয়নের নিজকাকড়া বিলের মাঝখানে তাদের একা পেয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মারপিট ছিনতাই ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনা ঘটায়। এ বিষয়ে শনিবার (২৯শে মার্চ) গাবতলী থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ এর নিকট ১১ জনের নামে ও অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে অভিযুক্ত করে দুইটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার সুখানপুকুর ইউনিয়নের কুরিরপাড়া গ্রামের বুলু প্রাং এর মেয়ে ও ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য ববিতা, একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরুষ ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম উজ্জ্বল (৪৫), খালেরপাড়া গ্রামের কৃতিশের ছেলে পলাশ রায় পলান (৪০), পারকাকড়া ভাঙ্গীরপাড়া এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে ছনি মিয়া (৩০), একই এলাকার আমছাল আলীর ছেলে শহীদ (২৯), কামাল হোসেন (২৮), কাজলাপাড়া গ্রামের বুলু প্রাং এর ছেলে মেহেদী হাসান, পারকাকড়া ময়নাতলা গ্রামের বিরাজের ছেলে রাফি (৩২), চকডঙ্গর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (৩২), এবং অপরজন হলেন, আমতলী পোড়াপাড়া এলাকার জালাল মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়াসহ (২৮) অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ শে মার্চ শুক্রবার ৯টার দিকে সুকানপুকুর ইউনিয়নের নিজকাকড়া বিলের মাঝখানে নিজকাকড়া গ্রামের মৃত মিরা প্রাং এর ছেলে হোটেল ব্যবসায়ী এমদাদুলকে ববিতাসহ উপরের অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অভিনব কায়দায় আটকে তার থেকে তার মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও ব্যবসায়ের টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে রাস্তা থেকে এমদাদুলকে জোরপূর্বক নির্জন ভুট্টার ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে ববিতা জড়িয়ে ধরে মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়াতে এবং তার পরিবারকে দেখানোর এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে এবং টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে তার থেকে ফাঁকা তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়।
একসময় জিবন ও সন্মান বাঁচানোর জন্য তার গচ্ছিত ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা অভিযুক্তদের দিয়ে তারা তাকে স্বাক্ষরকৃত স্ট্যাম্প ও ডিভিও ছাড়া শুধু মোটরসাইকেল ফিরত দেয়। পরবর্তীতে সেগুলো দেখিয়ে আবারো তার কাছে থেকে টাকা দাবি করে। অনন্য আরেকটি অভিযোগ করেন একই এলাকার শচীন চন্দ্র দাসের ছেলে রতন চন্দ্র দাস। তিনিও একই ব্যক্তিদের নামে একই অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে গাবতলী থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত আব্দুস শুকুর এর কাছ জানাতে চাইলে তিনি বলেন, এজাহার প্রসঙ্গে যেটি দেয়া হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে যদি সত্যতা প্রমাণিত হয়। তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে এমন বিষয় তুলে এনে বেশ কয়েকজন ইউপি সদস্যরা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবর অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।