আজাদুর রহমান:
সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কোরবানির মৌসুমে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে গেছে কামারদের। ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
বগুড়ার গাবতলী, সোনাতলা সহ বিভিন্ন উপজেলাসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের কামার পল্লির লোকজন কোরবানীর ঈদে মাংস কাটার সরঞ্জাম তৈরীতে কামার পল্লীর কামারদের দম ফেলানোর ফুরসত নেই। দা, বঁটি, হাঁসুয়া, চাপাতি, ছুরিসহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরির টুংটাং শব্দ আর ক্রেতাদের আনাগোনায় শরগরম কামার পল্লিগুলো।
ঈদের চাহিদা পূরণ করতে নতুনের পাশাপাশি আবার পুরনো সরঞ্জামের সান দেয়া চলছে। কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। বছরের এ সময়ে তাদের লাভও বেড়ে যায় অনেকাংশে। ফলে সময় নষ্ট করতে নারাজ তারা। এ ব্যস্ততা থাকবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত।
কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহা হয়ে উঠছে দা, বঁটি, ছুরি, তৈরিকৃত দা, বঁটি, ছুরি, চাপাতি স্তূপ করে রাখা হচ্ছে, এতে ভরে উঠেছে এসব কামারের দোকান।
গাবতলী উপজেলা কয়েকজন কামারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১২০ থেকে ২৪০ টাকা, দা ৪৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বঁটি ৩০০ থেকে ৫৫০, পশু জবাইয়ের বড় ছুরি ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা, চাপাতি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কেজি ওজনে নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে। আগে যেসব দোকানে দুজন করে শ্রমিক কাজ করত, এখন সেসব দোকানে ৩-৫ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন। কামারদের অভিযোগ কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লার দাম ও লোহার দাম বেড়ে গেছে। এতে তাদের তেমনটা লাভ হচ্ছে না।
বঁটি বানাতে আসা রেয়াজুল রেজা মুনসী, জাহিদুল ইলাম ‘আমির হোসেন, রফিকুল ইসলাম মোল্লা, নজরলইলাম সহ অনেকেই জানান, আগের চেয়ে দাম অনেকগুন বেশি। আগে যে বঁটি বানাতাম ২০০-৩০০ টাকা সেটি এখন বানাতে লাগছে ৪০০-৫০০ টাকা। চাপাতি বানাতে আসা বেলাল হোসেন জানান, আর ক’দিন পর কোরবানি ঈদ। তাই চাপাতি বানাতে কামারের দোকানে এসেছে। আগে যে চাপাতি কিনতাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় সেই চাপাতি এখন নিজের লোহা দিয়ে বানিয়ে নিলাম ৬৫০ টাকা করে।
তিনি আরও জানান, কেজি প্রতি লোহা নিচ্ছে ৭০০ টাকা। বঁটি বানাতে আসা আবু তালেব জানান, আগের চেয়ে দাম বেশি চাচ্ছে। নিজে লোহা দিলাম তার পরও মজুরি চায় ৩০০-৪০০ টাকা। দাম বেশি হলেও প্রয়োজন-তাই কিনতে বাধ্য হচ্ছি।