আজাদুর রহমান:
বগুড়ায় ২৪ টি মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী বিরাজুল ইসলাম ব্রাজিল (৩৪) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাত ১১টার দিকে কাহালু উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের পোড়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্রাজিল বগুড়া শহরের দক্ষিণ গোদারপাড়ার শাহজাহান ওরফে কালুর ছেলে। বেশ কয়েক বছর ধরে কাহালু থানার পোড়াপাড়া এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কাহালু থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, একাধিক মামলার আসামি ব্রাজিলকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার শরীরে পা থেকে মাথা পর্যন্ত কোপানোর দাগ রয়েছে। তবে কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড এবং কারা ঘটিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।
পুলিশের তথ্যানুযায়ী শীর্ষ সন্ত্রাসী ব্রাজিল ১৫ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সেক্রেটারী ও যুবদল চারমাথা আঞ্চলিক কমিটির সাবেক সভাপতি ছিল। এছাড়াও ২০১৭ সাল পর্যন্ত ব্রাজিল যুবদলে ছিল। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে শহরের পালশার উজ্জ্বলসহ দুটি হত্যা, দুটি অস্ত্র আইন, পাঁচটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে, একটি মাদক, দুটি সন্ত্রাস বিরোধী আইনে, চারটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও ছয়টি চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য আইনে এবং দুটি অ্যাসিড নিক্ষেপের মামলা’সহ মোট ২৪ টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, সাবেক যুবদল নেতা হলেও নিহত ব্রাজিল বর্তমানে বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর ছত্রছায়ায় ছিলেন। গত ২৯ মে ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবু সুফিয়ান শফিক এর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা করেছে।
এ বিষয়ে বগুড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যান্ড অপস আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নিহতের লাশ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ মর্গে রয়েছে এবং উক্ত ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।
একই রাতে বগুড়া শহরের বনানী টু মাটিডালী দ্বিতীয় বাইপাস সড়কের সাবগ্রাম কুড়শাপাড়া এলাকায় সড়কের পাশে একটি খালে কালভার্টের নিচে পানি
থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের নাম সম্রাট ইসলাম। তার বয়স ৩৭ বছর৷ তিনি সোনাতলা উপজেলার চামুরপাড়া এলাকার মৃত আজিজার মোল্লার ছেলে। সম্রাট পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে সদর উপজেলার সাবগ্রাম কুরশা এলাকায় ২য় বাইপাস সড়কের একটি কালভার্টের নিচে পানির মধ্যে থেকে সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের স্ত্রী আকলিমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী গতকাল বিকাল চারটার দিকে তার অটোরিকশা নিয়ে বের হন। সন্ধ্যার পর কোন এক কারণে আমার শ্বাশুড়ি সম্রাটকে ফোন দেয়। সেসময় সম্রাটের ফোন অপরিচিত একজন রিসিভ করে বলে রং নম্বর। এরপর থেকে সম্রাটের সাথে আর যোগাযোগ করা যায়নি। পরে সকালে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ছবি দেখে সম্রাটের মরদেহ শনাক্ত করি।’
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, নিহতের পরিচয় মিলেছে। আমরা নিহতের পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি সম্রাট অটোরিকশা চালক ছিলেন। মরদেহ উদ্ধারের সময় তার অটোরিকশা পাওয়া যায়নি। আমরা ধারণা করছি এটা হত্যাকাণ্ড। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। কি কারণে এ হত্যাকাণ্ড এবং কারা জড়িত তা পরে জানাতে পারবো।