আজাদুর রহমান:
বগুড়ায় ব্যাংকগুলোতে নেই নতুন টাকা। কিন্তু রাস্তার ধারে বিক্রি হচ্ছে নতুন টাকা। এক হাজার টাকার নতুন নোট এক হাজার ৩০০ টাকায়। অথচ এই নতুন টাকা ব্যাংক গ্রাহকের দেওয়ার কথা। সেই টাকা কিনে নিতে হচ্ছে অধিক দামে।
যুগ যুগ ধরে চলে আসছে ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকার ব্যবসা। কারও কারও বাবা-দাদার ব্যবসা ছিল এটা। ব্যাংক থেকে বিকল্প পথে অধিক টাকায় কিনতে হচ্ছে নতুন টাকা। এমন না যে; ব্যাংকগুলো টাকা বিপরীতে টাকা, নতুন নোট দিচ্ছে। হাজারে দেড়শ থেকে দুইশত টাকা বেশি দিয়ে কিনে সেই টাকা বিক্রি হচ্ছে আরও লাভে। আর ব্যাংকে না পেয়ে গ্রাহকরা বাধ্য হচ্ছে অধিক দামে নতুন টাকা কেনার জন্য।
ঈদে সালামি হিসেবে ছোট-বড় সবাই টাকা দেয় আর নেয়। সেই টাকার নোট যদি নতুন হয় তাহলে তো কথাই নেই। আনন্দ বহুগুনে বেড়ে যায়।
প্রতি বছরই ঈদের আগে নতুন নোট বাজারে ছাড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে নতুন টাকা গ্রাহকের হাতে যায়। কিন্তু যে পরিমাণ নতুন টাকা ব্যাংক গুলো দেয় তার চেয়ে অনেক বেশি চাহিদা থাকে গ্রাহকের। ফলে ব্যাংক জানিয়ে দেয় নতুন টাকা নাই। কিন্তু সেই নতুন টাকা আবার বগুড়ায় বিভিন্ন স্থানে অধিক দামে বিক্রি হয়।
বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ১০ টাকার নতুন নোট এক হাজার টাকার বান্ডেল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা বেশিতে, ২০ টাকা নোটের বান্ডেল ২৫০ বেশিতে, ৫০ টাকার নোটের বান্ডেল ৩৫০ বেশিতে, ১০০ টাকার নোটের বান্ডেল ৪০০ টাকা বেশিতে, ৫ টাকার নোটের বান্ডেল ২৫০ টাকা বেশিতে, দুই টাকার নোটের বান্ডেল ৮০ টাকা বেশিতে। প্রতিটি বান্ডেলে একশত পিস করে নতুন নোট থাকে।
সে হিসেবে ১০ টাকার নোটের বান্ডেলে থাকে এক হাজার টাকা। ২০ টাকার নোটের বান্ডেলে থাকে দুই হাজার টাকা। ৫০ টাকার নোটের বান্ডেল থাকে পাঁচ হাজার টাকা আর ১০০ টাকার নোটের বান্ডেলে রয়েছে ১০ হাজার টাকা। রাস্তার ধারের নতুন টাকার বাজারে ১০ টাকা নোটের বান্ডেলের দামই সবচেয়ে বেশি কারণ এ টাকার চাহিদাও বেশি রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা। বগুড়া ৩ নং রেলগেট এলাকায় একজন ব্যবসায়ী জানান, ব্যাংকের সাথে তাদের সরাসরি যোগাযোগ আছে সেই যোগাযোগকে পুঁজি করেই তারা নতুন নোট নিয়ে আসে এবং অধিক দামে বিক্রি করে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া শাখার নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, আমরা শুধুমাত্র দশটি ব্যাংকে নতুন নোট সরবরাহ করে থাকি গ্রাহকরা সেখান থেকে নোট সংগ্রহ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া শাখা থেকে স্টাফ ব্যতীত নতুন নোট সরবরাহের কোন সুযোগ নেই। ব্যবসায়ীরা যদি অনৈতিকভাবে নিয়ে থাকে আমরা সেদিকে পরবর্তীতে আরও সতর্ক হব।