আজাদুর রহমান:
রমজান মাস এখনও শুরু হয়নি। তার আগেই খেজুরের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক ও করহার বৃদ্ধি, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি এবং ঋণপত্র জটিলতার কারণে এ বছর খেজুরের দাম বেড়েছে। তবে ক্রেতারা বলছেন, সিন্ডিকেটের ব্যবসায়ীদের কারণেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
শনিবার (২রা মার্চ) বগুড়ায় খেজুরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে ইরাকি খেজুর কেজিপ্রতি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ১০০ টাকা। দুবাইয়ের ইরাকি জাহিদি জাতের খেজুর ১০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকা, যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা। দাবাস ও লুলু জাতের খেজুর ১০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ টাকা, যা গত বছরে ছিল ২ হাজার ৪০০ টাকা। মরিয়ম জাতের খেজুর বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। মজদুল খেজুর ৫ কেজি ওজনের কার্টুন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা, যা গত বছর ছিল ২ হাজার ৮০০ টাকা। এ ছাড়াও সৌদি আরবের মাসরুক ও সাফাই জাতের খেজুর পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা, যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। গত বছরের ফরিদা খেজুর ২৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এবার বেড়ে ৪৫০ থেকে ৫৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খেজুর কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন, ‘রমজানে খেজুর রাখতেই হয়, কিন্তু সেই খেজুরের দাম আমাদের মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা সবাই সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি।
বগুড়া সপ্তপদী মার্কেট এলাকার খেজুর বিক্রেতা বলেন, ‘গত বছরের রমজানের পরই ধীরে ধীরে দাম বাড়তে থাকে। দুই বছরের ব্যবধানে কিছু খেজুরের দাম এখন দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতি মাসেই দাম বাড়ছে। আমরা যেমন দামে কিনি খুচরায় তেমন দামেই বিক্রি করি।’
খেজুর আমদানিকারক মেসার্স এমএ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মনসুর আলী বলেন, ‘খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। খেজুরের শুল্কায়ন মূল্য দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়েছে। এর প্রভাবে গত বছরের তুলনায় এ বছর খেজুর আমদানিতে দু-তিনগুণ ব্যয় বেশি হচ্ছে। লোকজন কেনাও কমিয়ে দিয়েছে। তবে যে খেজুর আছে তাতে রমজানে বগুড়ায় কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়।’
এ বিষয়ে জানতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার বগুড়া জেলা শাখার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রেজভী জানান, প্রকৃত বাজার মূল্য সম্পর্কে কৃষি বিপণন বিভাগ মূল্য নির্ধারণ করবে। আমরা সেটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এবং সারা বছরের তুলনায় রমজান মাসে যেন নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে সে বিষয়ে আমরা ছুটির দিন সহ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছি।