আজাদুর রহমান:
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং হোস্টেলের একটি পড়ার টেবিল দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই আবাসিক হোস্টেলের আটটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন আজ বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা করেছে। সভা শেষে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর থেকেই সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকদের সঙ্গে বর্তমান কমিটির সভাপতি শৈশব রায়ের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ছাত্রদের আবাসিক হোস্টেলে একটি পড়ার টেবিল দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে হাতাহাতি হয়। এর জেরে বুধবার রাতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে বর্তমান সভাপতি শৈশব রায়ের সমর্থকেরা হোস্টেলের অন্তত ছয়টি কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর চালান।
ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে উভয় পক্ষ দাবি করেছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আফ্রাজিম, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আলী আহমেদ ও সীমান্ত কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তবে বর্তমান সভাপতি শৈশব রায় দাবি করেছেন, তাঁর সমর্থকদের মধ্যে আহত রিদওয়ান আলম, তালহা, নাদিম, আরিফ ও দ্বীপরাজকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে।
কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী, পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২১ সালে আতিকুরকে সভাপতি ও মোফাজ্জলকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ছয় সদস্যের একটি আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই ২৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। কমিটি ঘোষণার পরপরই নেতারা কোন্দলে জড়িয়ে পড়েন। পরে তাঁদের অনুসারীরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। ওই কোন্দলের জেরে গত বছরের ৩০ মার্চ দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা ও আবাসিক হোস্টেলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়ও ওই সময় কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও করা হয়।
এ বিষয়ে ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আনিসুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের সুবিধাবঞ্চিত ও সুবিধাভোগী দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কেউ ভর্তি রয়েছেন কি না, তা জানা নেই। কলেজের পরিস্থিতি এখন শান্ত।