আজাদুর রহমান:
বগুড়ায় শিশু বুলবুল হত্যার একমাত্র আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ১০ ই মার্চ (রবিবার) বিকাল সাড়ে চারটায় বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক হাবিবা মন্ডল এ রায় দেন৷ একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়৷
দণ্ডিত আসামির নাম সুজন সরকার। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার লক্ষ্মীকোলা এলাকার জাফর সরকারের ছেলে। পেশায় ট্রাকের হেলপার সুজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাছিমুল করিম হলি।
এর আগে, ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর সকালে উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের লক্ষিকোলা গ্রামের এস এ এম নামে একটি পুরাতন ইটভাটা থেকে গলা, হাত ও পায়ের রগ কাটা অবস্থায় বুলবুল হোসেন বিজয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷ বিজয় উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের লক্ষিকোলা কাজিপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক সাইদুল ইসলামের ছেলে। সে লক্ষিকোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নাছিমুল করিম হলি বলেন, ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিজয় তার প্রতিবেশী সুজনের বাড়িতে আসে। সেখান থেকে তারা দুজন ফুটবল খেলার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। পথিমধ্যে বিজয় কোন কারণে সুজনকে মা তুলে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালি দেয়। এসময় সুজন ক্ষিপ্ত হয়ে বিজয়ের ঘাড়ের পিছন দিক থেকে স্বজোরে চেপে ধরে। একপর্যায়ে বিজয় অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে সুজন ভয়ে তাকে টেনে বাঁশঝাড়ের মধ্যে লুকিয়ে রেখে বাড়িতে চলে যায়। বিকেলের দিকে বিজয়কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মাইকিং করতে দেখে ভয় পেয়ে যায় সুজন। রাত ৯টার দিকে সুজন বাঁশঝাড়ে গিয়ে বিজয়কে যেভাবে রেখে এসেছিল সেভাবে পড়ে থাকতে দেখে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পুনরায় বাড়ি গিয়ে ধারালো চাকু এনে বিজয়ের দুই হাত-পায়ের রগ ও গলা কেটে ফেলে এবং লাশ গুম করার জন্য শাজাহানপুর উপজেলার এস এ এম নামে একটি পুরাতন ইটভাটার চুল্লির ভিতর লুকিয়ে রাখে। ইটভাটা থেকে দুর্গন্ধ পান স্থানীয়রা। পরে পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠায়।
তিনি আরও জানান, সকল সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত সুজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।