আজাদুর রহমান:
বগুড়ার যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ৬টায় থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীতে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১ সেন্টিমিটার। এরপর থেকে নদীতে পানি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। পানি বাড়ায় যমুনা তীরবর্তী ২০ হাজার ৮২০ পরিবারের ৭৯ হাজার ৩৭৯ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এখন নদীতে পানি বৃদ্ধির স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আগামী ৮ জুলাই থেকে নদীর পানি কমতে শুরু করতে পারে।
জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা এবং ধুনট উপজেলা যমুনা নদীর তীরবর্তী। যমুনায় পানি বাড়লে এ তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে প্লাবিত হয়। বন্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় সারিয়কান্দি উপজেলা। বর্তমান পানিবৃদ্ধির ফলে সারিয়াকান্দি উপজেলার নদী তীরবর্তী নিচু এলাকার বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, বোহাইল, কাজলা, চন্দনবাইশা, সারিয়াকান্দি সদর, হাটশেরপুর, কুতুবপুর, ও কামালপুর ইউনিয়নের ১২২টি চরের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। এ এলাকায় বসবাসকারী লোকজন তাদের গবাদি পশু সঙ্গে নিয়ে বাধে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। এসব এলাকার রোপা, মাশকলাই, মরিচ, স্থানীয় জাতের গাঞ্জিয়া ধানসহ ফসলি জমি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
বগুড়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান জানান, শুধু সারিয়াকান্দিতে ১ হাজার ৮৫ হেক্টর জমির আউস ধান, ভূট্টা, পাট ও সবজি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বন্যার্তদের সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে বগুড়ার বন্যার্তদের জন্য সব মিলিয়ে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার আর ৫০০ মেট্রিক টন জিআর চাল পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, শুক্রবার থেকে সারিয়াকান্দি সোনাতলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। ত্রাণ সামগ্রী মধ্যে ১০ কেজি জিআর চাল, মুড়ি, চিড়া, গুড়, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, পাউরুটি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে।