বরিশালের মানুষ জনপ্রিয় অভিনেতা অলিউল হক রুমি। মঞ্চ ও টিভি নাটকে মায়ের ভাষা দিয়েই তিনি দেশজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এ ভাষাতেই তিনি দর্শককে হাসাতেন, কাঁদাতেন। নাটকে তার দেওয়া বরিশালের আঞ্চলিক ভাষার কিছু কিছু ডায়ালগ আজও দর্শকদের মুখে লেগে আছে। অভিনয়ের পাশাপাশি রুমি কাজ করেছেন সংবাদমাধ্যমেও।
ডেস্ক রিপোর্টঃ
মাসখানেক আগে হঠাৎ করেই রুমির শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে। তারপর থেকে শুরু হয় পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এক ভিন্ন উপায়, সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে আজ সোমবার (২২ এপ্রিল)। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন এই দাপুটে জনপ্রিয় অভিনেতা।
বরিশালের বরগুনায় জন্ম রুমির। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক। মা হামিদা হক। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন রুমি। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।
অভিনয়ে তিন দশকের বেশি সময় পার করেছেন রুমি। দীর্ঘ এ পথচলায় অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক ও সিনেমায়। অভিনয়নৈপুণ্য দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে গেছেন। পর্দায় তার উপস্থিতি বাড়তি আনন্দ দিয়েছে দর্শকদের। অভিনয়ের পাশাপাশি কাজ করেছেন দেশের ঐতিহ্যবাহী জাতীয় পত্রিকা ‘দৈনিক ইত্তেফাক’এ।
১৯৮৮ সালে রুমির অভিনয়ের শুরু থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনো ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে। একই বছর ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও। গত কয়েক বছর এই অভিনেতা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষাতে বেশি অভিনয় করে আসছিলেন।
২০০৯ সালে ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন রুমি। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সাজেশন সেলিম’, ‘বোকাসোকা তিনজন’, ‘মেকআপ ম্যান’, ‘ঢাকা টু বরিশাল’, ‘ঢাকা মেট্রো লাভ’, ‘বাপ–বেটা দৌড়ের উপর’, ‘আমেরিকান সাহেব’, ‘জার্নি বাই বাস’, ‘বাকির নাম ফাঁকি’, ‘যমজ-৫ ’, ‘যমজ-৬ ’, ‘যমজ-৭ ’, ‘যমজ-৮’, ‘যমজ-৯ ’, ‘যমজ-১০ ’, ‘রতনে রতন চিনে’, ‘২০০ কদবেলী ইত্যাদি’, ‘সোনার শিকল’, ‘কমেডি ৪২০ ’, ‘প্রেসিডেন্ট সিরাজউদ্দৌলা’, ‘আকাশ চুরি’, ‘চৈতা পাগল’, ‘জীবনের অলিগলি’, ‘মেঘে ঢাকা শহর’ ইত্যাদি।
দীর্ঘদিন ধরে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন অলিউল হক রুমি। ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে থেকে দেশে ফিরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এই অভিনেতা।