ডেস্ক রিপোর্টঃ
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরিত হয়।
আজ বুধবার দুপুরে প্রথমে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার পর দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে আটজন আহত হওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
উভয় পক্ষের আহতরা হলেন ইদ্রিস হাওলাদার (৫৫), বাদশা হাওলাদার (৬৫), বাবুল হাওলাদার (৫০), শাহিন হাওলাদার (৪৫), চানমিয়া হালাদার (৬০), ইউনুস হাওলাদার (৫০), জামাল হাওলাদার (৪৫), বিল্লু সর্দার (১৬), ফেরদৌস মাতুব্বর (২২), বিউটি বেগম (৪৫)।
মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বড় ছেলে, মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিবুর রহমান আসিব খান আনারস প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে শাজাহান খানের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পুলিশ, আহত ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার বালিয়া গ্রামের ৯৫ নম্বর বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের বাইরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মোটরসাইকেল ও আনারস প্রতীকের দুই পক্ষের সমর্থক ও কর্মীদের মধ্যে প্রথমে কথা-কাটাকাটি এবং এক পর্যায় ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় উভয় পক্ষ বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে দ্রুত পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনজনকে ভর্তি ও বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। নাম না প্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন জানান, বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল নিতে আসেন মাদারীপুর সংসদ সদস্য শাজাহান খানের ছেলে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আসিবুর রহমান খানের সমর্থক এনামুল হাওলাদার ও তাঁর লোকজন। এ সময় অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের পাভেলুর রহমান শফিক খানের সমর্থক আজাদ হাওলাদার বাধা দেন। এ নিয়ে প্রথমে কথা-কাটাকাটি পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
এনামুল হাওলাদার ও আজাদ হাওলাদারের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলাউল হাসান বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রের বাইরে সমর্থকদের মাঝে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ৮ জনের মতো আহত হয়েছেন। মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাসুদ আলম বলেন, ‘মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। আর যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন আছে।’
উল্লেখ্য, মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট দুজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১৫ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত সদর উপজেলায় মোট ভোটার ৩ লাখ ২২ হাজার ৪২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার, নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২১ জন। আর অন্যান্য ভোটার সংখ্যা ৫ জন। এখানে মোট ভোটকেন্দ্র ১১৭টি, যেখানে ৭৯৪টি কক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন ভোটাররা।