মালদ্বীপে চলছে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। রোববার (২১ এপ্রিল) শুরু হওয়া এই নির্বাচন দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর জন্য অগ্নিপরীক্ষা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কেননা, এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপরেই অনেকটা নির্ভর করছে দ্বীপরাষ্ট্রটির সঙ্গে ভারত ও চীনের সম্পর্ক কেমন হবে।
মালদ্বীপের এই নির্বাচনের ওপর ভারত ও চীন দুই দেশই সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। এই নির্বাচনের ফলই হয়তো বলে দেবে, ভারত মহাসাগরে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা এই দেশটির ওপর আগামীতে কার প্রভাব কতটা থাকবে।
দীর্ঘদিন ধরে মালদ্বীপের ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ অনেকটা একচ্ছত্র থাকলেও, গত বছরের সেপ্টেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোহাম্মদ মুইজ্জু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সমীকরণ পাল্টে যেতে থাকে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই মুইজ্জু তার ভারতবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে দেন।
নিজের ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু/ ছবি: এএফপি
নির্বাচনী ইশতেহারে মুইজ্জু মালদ্বীপকে ভারতের প্রভাব থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন, আর এটিই তাকে নির্বাচনে জয়ী হতে সাহায্য করে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরপরই তিনি মালদ্বীপে থাকা ভারতীয় সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য নয়া দিল্লিকে চাপ দিতে থাকেন।
এবারের সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনে মালদ্বীপের ২ লাখ ৮৪ হাজার নাগরিক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, রোববার রাতেই নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যাবে। মালদ্বীপে সংসদের আসন সংখ্যা ৯৩টি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়টি রাজনৈতিক দলের ৩৬৮ জন প্রার্থী।
দেশটিতে প্রধান দুটি দল হচ্ছে মুইজ্জুর পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ ইব্রাহিম সলিহ’র নেতৃত্বাধীন মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি)। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু হলেও বর্তমান সংসদে অবশ্য এমডিপি’র আধিপত্য রয়েছে। অন্যদিকে, পিএনসি’র লক্ষ্য হলো একক অথবা জোটগতভাবে হলেও এমডিপি’র এই আধিপত্য শেষ করা।
সাদা সৈকত ও অসম্ভব সুন্দর রিসোর্টের পাশাপাশি একটি ভূ–রাজনৈতিক হটস্পটও হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম ব্যয়বহুল পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত মালদ্বীপ। নিরক্ষীয় অঞ্চলজুড়ে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) বিস্তৃত ১ হাজার ১৯২টি ক্ষুদ্র প্রবাল দ্বীপের মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক পূর্ব–পশ্চিম শিপিং লেনগুলো অতিক্রম করে।
সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স