আজাদুর রহমান:
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে সহকারী প্রধান শিক্ষক, ল্যাবরেটরী কাম কম্পিউটার শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী নিয়োগে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্য ও নানা দুর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে।
এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া নিয়োগ বানিজ্যের একটি “কল রেকর্ড” বগুড়া জেলা প্রশাসকের নিকট দায়ের করলে প্রশাসনিক নির্দেশে এই পরীক্ষা বাতিল করা হয়। প্রথমে নিয়োগ বোর্ড থেকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও শাজাহানপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি জান্নাতুন নাইমকে প্রত্যাহার করা হয়।
এরপর নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্যরাও নিয়োগ কার্যক্রমে অংশ নিতে অসম্মতি জানান। ফলে নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড হয়ে যায়।
এছাড়া নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ তদন্ত করতে জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম।
নিয়োগ বোর্ডের সদস্য ও শাজাহানপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি আলী ইমাম ইনোকী ও অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন মুকুল গোহাইল ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক, ল্যাবরেটরী কাম কম্পিউটার শিক্ষক ও ৭ জন কর্মচারী নিয়োগের সিলেকশন করে প্রায় দেড় কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহন করেছে।
এই নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আত্মসাত, গাছ বিক্রয় সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এজন্য প্রতিষ্ঠানের কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলামান।
এমন পরিস্থিতিতে শনিবার নিজ প্রতিষ্ঠানে এসব পদে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু নিয়োগ বানিজ্যের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “অডিও কল রেকর্ড” ফাঁস হওয়ায় এবং শিক্ষার্থীর অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণাত নিয়োগ কমিটি থেকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিকে প্রত্যাহার করে নির্দেশনা দেয় বগুড়া জেলা প্রশাসন।
আর ফাঁস হওয়া ওই অডিও কল রেকর্ড থেকে কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনের কথপোকথন থেকে জানা যায়, ৯টি পদে জনবল নিয়োগে মোটা অংকের বানিজ্য করছেন কলেজের বর্তমান সভাপতি আলী ইমাম ইনোকী। এর মধ্যে ৩ জনের টাকা অধ্যক্ষের কাছে রয়েছে।
এদিকে ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ড ও অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তবে এসব দুর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যের কথা অস্বীকার করেছেন অধ্যাক্ষ ও সভাপতি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. হযরত আলী বলেন, বিষয়টি অবহিত হয়েছেন। এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তিনি প্রতিবেদন জমা দিবেন বলে জানান।
অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি ও গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু জানিয়েছেন, অভিযোগের তদন্ত এবং প্রচার হওয়া অডিও কল রেকর্ডটি সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করলেই বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল।