আজাদুর রহমান:
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর মোঃ হেলাল মাহমুদের ছেলে সাকিবুল হাসান। মাতা মৃত মোছাঃ রেহেনা আকতার। দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই ক্লাস সেভেনে পড়াশুনা করে। এবার এসএসসিতে ১৩শ নম্বরের মধ্যে ১২৫৭ নম্বর পেয়েছেন অর্থাৎ জিপিএ-৫ পেয়েও ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সাকিবুল হাসানের। ছেলের ভবিষ্যৎ শিক্ষার খরচ কীভাবে যোগাবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় তার পরিবার। সোহানের বয়স যখন ৫ বছর তখন তার মা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মারা যান। অভাব-অনটনের মধ্যে উপজেলার খোর্দ্দ বলাইল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সাকিবুল হাসান এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ায় খুশি হয়েছেন পরিবারসহ স্কুলের শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা। তবে অর্থাভাবে সেই আনন্দ এখন বিষাদে পরিণত হচ্ছে তার।
জানা গেছে, চাষাবাদ করার মতো কোন জমি না থাকায় ছোট্র একটি মুদির দোকান দিয়ে কোনোমতে পরিবারের জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করেন তার বাবা। অভাবের এ সংসারে শিক্ষক ও আত্মীয়দের সহযোগিতায় কষ্ট করে পড়াশোনা করেছে সাকিবুল হাসান। একটি টিনের ঘর ছাড়া সম্বল বলতে আর কিছুই নেই তাদের। অর্থাভাবে সাকিবুল হাসান কলেজে ভর্তি হওয়াই এখন অনিশ্চিত।
এ বিষয়ে সাকিবুল হাসান বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্যারসহ সকল শিক্ষক আমাকে অনেক সহযোগিতা করছেন। বিনামূল্য আমাকে পড়াশুনার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেজন্য আমি আজ জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমার বাবা ছোট্র একটি মুদির দোকানের সামান্য উপার্জন তাতে আমাদের সংসার ভালোভাবে চলে না। আমার বাবার পক্ষে আমাকে কলেজে ভর্তি করা সম্ভব না। এখন দুশ্চিন্তায় ভুগছি বাবা কীভাবে ভালো কলেজে ভর্তি করবেন। আমি আরও পড়তে চাই। আমার স্বপ্ন বুয়েটে ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু কলেজে ভর্তি ও পড়ার খরচ জোগানোর সামর্থ্য আমাদের নেই।
খোর্দ্দ বলাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাফি বলেন,ইসমাইল একজন মেধাবী ছাত্র। তার পরিবারের আর্থিক সামর্থ্যের কথা বিবেচনা করে তাকে বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ দিয়েছিলাম। গরিব পরিবারের সন্তান হয়েও ভালো রেজাল্ট করে এখন অর্থের অভাবে ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার। তাই এমন মেধাবীদের লালন করতে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.তৌহিদুর রহমান বলেন, সোহানকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উপজেলা প্রশাসন থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা প্রদান করা হবে।