মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অফিসে যাওয়ার পথে বুকে ব্যাথা নিয়ে রাস্তায় ঢলে পড়ে জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক অফিস সহায়কের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসার জন্য ছুটি চেয়েছিলেন তিনি কিন্তু ছুটি না পেয়ে অফিসে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবার।
আজ বুধবার সকাল ৮টায় অফিস থেকে ফোন পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলআনী ঝাপটা সড়কে তিনি ঢলে পড়েন বলে জানান তার পরিবার।
নিহত অফিস সহায়কের নাম মো. মিজানুর রহমান (৪৫)। তিনি গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়নের চর কালিপুরা গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে।
মিজানুর রহমানের স্ত্রী লিজা আক্তার বলেন, ‘এক সপ্তাহ যাবৎ আমার স্বামী অসুস্থ ছিলেন, শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গতকালও অফিস করে অসুস্থ হয়ে যান, ছুটি দেয় নাই উল্টো গেটের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এ সময় ঝিমুনি আসলে তাকে আট তলা থেকে ফেলে দেওয়া, চামড়া তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। আজ সকালে অফিস থেকে ফোন আসলে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। তারা যদি আমার স্বামীকে ছুটি দিত, তাইলে আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারতাম।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অফিস সহায়ক জানান, মিজানুর রহমান জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ কর্মরত ছিলেন। যার দ্বায়িত্বে ছিলেন বিচারক নাজনীন আক্তার। তিনি মাতৃকালীন ছুটিতে থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল ইসলাম। তিনিই ছুটি দেননি মিজানকে।
এদিকে সহকর্মীর মৃত্যুতে শোকাবহ অফিস সহায়করা একযোগে কর্মবিরতি পালন করে মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে গজারিয়ায় নিহতের বাড়িতে উপস্থিত হলে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এ সময় নিহতের বড় ভাই আলী আহমেদ মোল্লা বলেন, ‘আমার ভাইয়ের এক ছেলে, দুইটা মেয়ে। ছেলেটা অটিজম আক্রান্ত, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, আমরা এই বিচারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. হাফিজুজ্জামান খাঁন জিতু বলেন, ‘ছেলেটা আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা, অনেক ভালো একটা ছেলে, ঘটনাটা শুনে মর্মাহত হয়েছি।’