বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া বেলঘড়িয়া এলাকার কৃষক মনোয়ার হোসেনের ছেলে নাইমুল হক। আদমদীঘি রহিম উদ্দিন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছেন আহত কলেজছাত্র নাইমুল হক। তার ডান চোখে এখন পর্যন্ত তিনবার অপারেশন করা হয়েছে। এরপরও সেই চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পারছেন না তিনি। তার ধারণা, বিদেশে উন্নত চিকিৎসা পেলে হয়তো তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন।
নাইমুল জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে তিনি গত ১৮ জুলাই বগুড়া জেলা শহরে গিয়েছিলেন। ওই দিন তারা শহরের দত্তবাড়ি এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। দুপুর ১টায় শহরের জিরো পয়েন্টের দিকে এগোতে চাইলে সদর থানার সামনে অবস্থান নেওয়া পুলিশ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। তখন একটি টিয়ার শেল তার ডান চোখে আঘাত করে। পরে সহপাঠীরা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। ওই দিন তার চোখে প্রথম অপারেশন হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি ২৭ জুলাই ঢাকার ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে যান। সেখানে দ্বিতীয়বার চোখের অপারেশন হয়। পরে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে সর্বশেষ গত ৮ আগুস্ট তিনি আবারও ইসলামিয়া হাসপাতালে যান এব আরও একবার অপরেশন করা হয়।
তিনি জানান, চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তার আরও অপারেশন প্রয়োজন। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু তাতে তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন এমন কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না তারা। কিন্তু বিদেশে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করার মতো আর্থিক অবস্থা নেই নাইমের পরিবারের।
বর্তমানে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাইমুল হকের ভাগিনা হাবিবুল্লাহ শাহাল জানান, ১০ দিন আগে বগুড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে তাকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে যাওয়ার পর তিন দিন ধরে তার চোখের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে পাঁচ দিন আগে নাইমুলকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নাইমুলের পরিবার জানায়, প্রায় এক মাস ধরে অসুস্থ হলেও কেউ তার খোঁজখবর নেননি। কিংবা কেউ দেখতেও আসেননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত নেতাদের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য সরকারি সহায়তা কামনা করেন।