বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমার বাড়িতে যদি পাহারা না লাগে, আমার মসজিদে যদি পাহারা না লাগে তাহলে হিন্দু বন্ধুদের মন্দিরে কেন পাহারার প্রয়োজন হবে? আমরা এ ধরনের কোনো বৈষম্য চাই না। আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে করে গিয়েছে, এর মাধ্যমে সকল প্রকার বৈষম্যের কবর রচনা হোক। বাংলাদেশ একটা বৈষম্যবিহীন দেশে পরিণত হোক।’
আজ সোমবার সকালে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এক সমাবেশ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান। বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে নিহত রুদ্র সেন, অন্য শহীদ ও আহতদের জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জামায়াতের দিনাজপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলা।
এ সময় জামায়াত আমির বলেন, ‘ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন বিশেষ কোনো গোষ্ঠী, দলের বা সম্প্রদায়ের নয়। এখানে আপামর জনতা রাস্তায় নেমে এসে আন্দোলনকে সফল করেছে। এখানে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের লোকেরা শুধু লড়াই করে নাই, জাতি-দল-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আপামর জনতার এই আন্দোলনকে কেউ যদি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ তাদের রুখে দেবে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জনগণের সকল আন্দোলনে জামায়াত ইসলামী সঙ্গে থাকবে। স্বৈরাচার তার শেষ দিনগুলোতে দিশেহারা হয়ে আমাদের সন্তানদের হত্যা করেছে। এই বাংলাদেশ ছোপ ছোপ তাজা রক্তে ভরে উঠেছে। তবে আগে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাড়াকাড়ি-মারামারি হতো, মানুষ যেদিকে চলাফেরা করতে গেলে আতঙ্কে থাকত। এখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র-ছাত্রীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণও দাঁড়িয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কোনো মা তার সন্তান হারিয়েছেন, বাবা তার সন্তান হারিয়েছেন, স্ত্রী তার স্বামী হারিয়েছেন, ছোট সন্তানরা তার বাবাকে হারিয়েছেন, ভাই হারিয়েছে বোনকে, বোন হারিয়েছে ভাইকে। ৬৫ হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ ছোপ ছোপ তাজা রক্তে ভরে উঠেছে। আমাদের আগামী প্রজন্ম যেন বলতে পারে আমাদেরও আবু সাঈদ আছে, আমাদেরও রুদ্র আছে, আমাদেরও মুগ্ধ আছে। আমাদের এরকম হাজারো বীর আছে। আমরা সেই বীরদের অনুসারী। তারা যেন অনুপ্রাণিত হয়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর উত্তর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আফতাব উদ্দিন মোল্লা, জেলা উত্তর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাড মাহবুবুর রহমান ভুট্টুসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা।